১৯৮৩ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হলেও মূলতঃ এর কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হয় ১৯৮৬ সাল থেকে। বিদ্যালয়ের দাতা মরহুম আঃ মজিদ সরকার সাহেব এবং প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইয়াকুব আলী সাহেব এর ঐকান্তিক চেষ্ঠায় সরকারী অনুদান প্রাপ্তির পূর্বে নির্মিত বাঁস কাঠের ঘরগুলো তাড়াতাড়ি পাকা খুটি ও টিনের ঘরে পরিনত হয়। একজন দক্ষ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জনাব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ সকলকে নিয়ে সুষ্ঠভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। ১৯৮৮ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় ৯৫% ছাত্র-ছাত্রী পাশ করে। নতুন এই বিদ্যালয়ের প্রথম ফলাফলেই সকলের নজর কারে এই প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে ধীরে এর কার্যক্রম তরান্বিত হতে থাকে। ঘর দরজার উন্নয়নসহ এস.এস.সির ফলাফল এবং জুনিয়ার স্কলারশিপ পরীক্ষায় বৃত্তি প্রাপ্তিতে উপজেলার মধ্যে এই বিদ্যালয়টি একটি ভালো প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি লাভ করে। এর পর থেকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জনাব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ ২০০৪ সালে অবসর গ্রহণ করায় সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ ইয়াছিন আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে জনাব মোঃ ইয়াছিন আলী সকল শিক্ষক, শিক্ষিকা, ম্যানেজিং কমিটি এবং এলাকার জগনগণের সহযোগিতা নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সহিত বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসিতেছেন। বিগত ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের এস.এস.সি পরীক্ষায় A+সহ শতভাগ পাশের কৃতিত্বসহ অবকাঠামগত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০১৫ সালে এস.এস.সি. পরীক্ষায় গোল্ডেন A+সহ ৫জন A+পেয়েছে। বিদ্যালয়ের শুরু থেকেই ইয়াকুব ছাত্রাবাস নামে একটি আবাসিক হোস্টেল হয়েছে। যেখানে দূরবর্তী ছাত্ররা আবাসিকে অবস্থান করে একজন হোস্টেল সোপারের তত্বাবাধনে লেখাপড়া করে আসছে। সুবিশাল খেলার মাঠের উত্তর পাশে পাকা স্থায়ি একটি শহীদ মিনার আছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৫ শতাদিক শিক্ষার্থী রয়েছে। মোঃ ইয়াছিন আলী ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। নিম্নে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোসহ অন্যান্য দিক বর্ণনা করা হলো।
পাকাভবন:
(ক) ২২৫০ বর্গফুট কক্ষ ৩টি (ঝুকিপূর্ণ)। (খ) ১১৫২ বর্গফুট কক্ষ ২টি। (গ) ২৯৭০ বর্গফুট কক্ষ ৩টি।
আধাপাকা ভবন:
(ক) ৩১২০ বর্গফুট কক্ষ ৬টি। (খ) ১৯২০ বর্গফুট কক্ষ ৪টি।
টিনের ঘর:
(ক) ২১৬০ বর্গফুট কক্ষ ৫টি। (খ) প্রস্রাবখানা ৩টি। (গ) টিউবওয়েল ৩টি। (ঘ) শৌচাগার ৪টি। (ঙ) পানির মটার ১টি।
মোট জমির পরিমানঃ ১৭৮.৫০ শতাংশ
১৯৭১ সালে পরাধীনতার কবল থেকে মুক্ত হলেও সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাধ গ্রহণ করতে পারছিলামনা। তার কারণ জাতী তখন শিক্ষাদিক্ষায় অনগ্রসর। যে জাতি যত শিক্ষিত সেই জাতি তত অন্নত। আর তেমনই একটি কঠিন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়েছিলেন কালিয়া পাড়া গ্রামের কৃতি সন্তান আলোকিত মানুষ আব্দুল মজিদ সরকার। তিনি বুঝেছিলেন মানুষকে স্বাধীনতার স্বাধ গ্রহণ করতে হলে জাতিকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা উচিত।
১৯৭৩ সাল। কয়েকজন শিক্ষিত লোকের সমন্বয়ে কালিহাতি থানার মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আব্দুল লতিফ সিদ্দিকি মহোদয় কর্তৃক কিছু টিন দিয়ে আড়াই পাড়া বাজারে একটি টিনের ছাপড়াঘর তুলে স্কুলের কার্যক্রম শুরু করা হলেও জায়গা প্রদানের মত কোন ব্যক্তি না থাকায় অধিকন্ত অসহযোগিতা করায় স্কুল করা সম্ভব হয়নি। তৎকালিন ঐ স্কুলের শিক্ষক নিবাপারিশ্রমিকে যারা শিক্ষকতা করেছেন, তারা হলেন ১। জনাব মোঃ আবুল হাশিম এম.এ বর্তমানে এডভোকেট ২। জনাব মোঃ রিয়াজ উদ্দিন (বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক) উক্ত বিদ্যালয়) ৩। জনাব মোঃ আব্দুর বারি (অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক)। কিছুদিন যেতে না যেতেই এলাকার কিছু মানুষের অসহযোগিতা প্রতিকূল পরিস্থিতি ও সরকারের উদাসিনতার কারণে শিক্ষা বিস্তার প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়টি, এতে আব্দুল মজিদ সরকার মনে ভিষণ কষ্ট পান। বিদ্যালয়টি পূন:প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে থাকেন। ঠিক এর ধারাবাহিকতায় ১০ বছর পর ১৯৮৩ সালে এককভাবে পরিকল্পনা করেন বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য। অধম্য সাহস আর প্রচন্ড মনোবল নিয়ে এলাকাবাসীকে নিজ ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন আমি আপনাদের কাছে জায়গা জমি ও আর্থিক সাহায্য কিছুই চাইনা। আপনারা আমাকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন। আমি বিদ্যালয়টি পূন:প্রতিষ্ঠা করব ইনশাল্লাহ। অত:পর তার জেষ্ঠ পুত্র মোঃ ইয়াকুব আলী এককালীন আর্থিক অনোদান এবং আব্দুল মজিদ সরকার জমি দান করেন। যাতে বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত অন্নয়ন হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জনাব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ বি.এ. বিড কে নিয়ে শিক্ষাবোর্ড সহ অধিদপ্তরের বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ করে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। যথা সময়ে ৯ম শ্রেণি অনোমোদন আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু অত্যন্ত দু:ক্ষের সাথে বলতে হচ্ছে বিদ্যালয়টি পূর্ণঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠিত হতে না হতেই ১৯৮৭ সালের ১৭ই জুন দাতা মহান মানুষটির জীবনাবসান ঘটে।
পিতার অন্তিম ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মরহুম আব্দুল মজিদ সরকারের জেষ্ঠ পুত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইয়াকুব আলী বিদ্যালয়টির দেখভালের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য নিরলস চেষ্ঠা অভ্যাহত রেখেছেন। আজ আমাদের বিদ্যারয়টি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। শুরু থেকেই অদ্যবধি অনেক ছেলে-মেয়ে এ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশে করে দেশ পেরিয়ে দেশের বাহিরে সোনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। অন্ধকার ভেঙ্গে এ বিদ্যালয়টি আলোকবর্তিকা হিসেবে চারদিকে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি স্বঘর্বে দাড়িয়ে তার বিজয় গাথা গৌরব ঘোষণা করছে। আগামী দিনে আপনাদের সহযোগিতার হাত এই বিদ্যালয়টির প্রতি প্রসারিত হবে এমন প্রত্যাশাই একান্ত কাম্য।
যেসমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বর্গ এবং সম্মানিত অতিথিবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন তাদের তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
১৯৮৬: মরহুম শামছুল হুদা চৌধুরী, সাবেক স্পীকার, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ।
জনবা মোঃ শামছুল হক, সাবেক তথ্য মন্ত্রী।
মরহুম কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান এম.পি. বাসাইল-সখিপুর টাঙ্গাইল-৮।
জনাব মোঃ সদর উদ্দিন, চেয়ারম্যান, ইসলামিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড।
জুলাই ১৯৮৮: জনাব মোঃ আবু হেনা, সাবেক সচিব, স্থানিয় সরকার মন্ত্রানালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, রাষ্ট্রধুত জাপান।
ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯: জনাব খন্দকার আসাদুজ্জামান, সাবেক সচিব, পাট মন্ত্রানালয়।
জুলাই ১৭৯৮৯: জনাব মোঃ আবু হেনা, সাবেক সচিব, স্থানিয় সরকার মন্ত্রানালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, রাষ্ট্রধুত জাপান।
জনাব কামরুল ইসলাম, প্রধান উপদেষ্ঠা, এল.জি.আর.ডি, ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুারো।
জনাব নাজমুল আহসান, সাবেক জেলা প্রশাসক, টাঙ্গাইল।
১৯৯১: বেটি জে স্টেইন ক্রাউস, কো-অর্ডিনেটর কানাডা ফান্ড ফর লোকাল ইউনিসিয়েটিভ।
মাছুদা খাতুন শেফালী, এসিসটেন্ট কো-অর্ডিনেটর।
১৯৯১: Mr. Emile Gauveraue, কানাডিয়ান হাইকমিশনার।
১৯৯২: মিস্টার টমাস এস দাস, পরিচালক, ডিয়াকুনিয়া, বাংলাদেশ।
১৯৯২: মিস্টার সিলভিয়া ইসলাম, এইডপ্রোগ্রাম অফিসার, ব্রিটিশ হাইকমিশনার, ঢাকা।
১৯৯২: জনাব হুমায়ুন খান পন্নি, ডিপুটি স্পীকার।
১৯৯৪: জনাব মোঃ ইসমাইল হোসেন, এডিশনাল আই, জি অব পুলিশ, বাংলাদেশ, ঢাকা।
১৯৯৫: জনাব মোঃ আবু হেনা, সাবেক সচিব, মংস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রানালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
১৯৯৬: মোঃ শহিদুল্লাহ খন্দকার, থানা নির্বাহী অফিসার, সখিপুর, টাঙ্গাইল।
১৯৯৮: জনাব মোঃ মোসলেহ উদ্দিন, থানা নির্বাহী অফিসার, সখিপুর, টাঙ্গাইল।
২০০৮: জনাব জোবায়দা নুসরাত, P.O.PIU, ঢাকা।
২০০৯: প্রফেসর মুহাম্মদ শামছুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ঢাকা।
২০১০: প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, উপচার্য, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা।
২০১৪: জনাব শওকত সিকদার, চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ সখিপুর, টাঙ্গাইল।
২০১৬: জনাব মোঃ মশিউর রহমান, যুগ্ম সচিব, সাবেক জেলা প্রশাসক, নাটোর।
নাম | পদবী |
জনাব আলহাজ মোঃ আবুল হাশিম এম.এ. | সভাপতি |
জনাব শেখ মুজিবর রহমান | শিক্ষক প্রতিনিধি |
জনাব মোঃ আলাল উদ্দিন | শিক্ষক প্রতিনিধি |
জনাব শাহানারা আক্তার হেপি | সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি |
জনাব মোঃ আব্দুল হাই | অভিভাবক সদস্য |
জনাব মোঃ ইব্রাহিম হোসেন | অভিভাবক সদস্য |
জনাব মোঃ শাহাদত হোসেন | অভিভাবক সদস্য |
জনাব মোঃ হারুন অর-রশিদ | অভিভাবক সদস্য |
জনাব মালেকা আক্তার | সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য |
জনাব মোঃ ইয়াকুব আলী | প্রতিষ্ঠাতা সদস্য |
জনাব মোঃ ইব্রাহিম হোসেন | দাতা সদস্য |
জনাব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ বি.এ.বি.এড | কো-অপ্ট সদস্য |
জনাব মোঃ ইয়াছিন আলী | প্রধান শিক্ষক/সম্পাদক |
এস.এ.সি. | সন | % |
২০১২ | ১০০% | |
২০১৩ | ১০০% | |
২০১৪ | ১০০% | |
২০১৫ | ৯২.৬৮% | |
২০১৬ | ৮১.৬৪% | |
জে.এস.সি | ২০১১ | ৮৪.৬২ |
| ২০১২ | ৭৮.৭৮% |
| ২০১৩ | ৯০.১৪% |
| ২০১৪ | ৪১.৫৪% |
| ২০১৫ | ৮৫.১৪% |
২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ২৮ জন ছাত্র, ৬৩ জন ছাত্রী উপবৃত্তি প্রাপ্ত।
বর্তমান শিক্ষা বর্ষে ৭ম শ্রেণিতে-২জন। ৮ম শ্রেণিতে-১জন। ১০ম শ্রেণিতে-২জন বৃত্তিপ্রাপ্ত।
লক্ষ হলো ১০০% পাশ।
২০১০ সনে SSCপাশের হার ৮৯.৫৮%, A+ ২ জন।
২০১১ সনে SSCপাশের হার ১০০%, A+ ১ জন।
২০১২ সনে SSCপাশের হার ১০০%, A+ ৩ জন।
২০১৩ সনে SSCপাশের হার ১০০%।
২০১৪ সনে SSCপাশের হার ১০০%, A+ ২ জন।
২০১৫ সনে SSCপাশের হার ৯২.৬৮%, A+ ৫ জন।
২০১৬ সনে SSCপাশের হার ৮১.৬৪%।
বিদ্যালয়টি সখিপুর উপজেলার সদর থেকে ৭ কি.মি. পূর্বে কচুয়া হয়ে কচুয়া ভালুকা পাকা সড়কের সংলগ্ন আড়াইপাড়া বাজার নামক স্থানে বিদ্যালয়টি অবস্থিত।
২০১০ সাল: এস.এস.সি.- A+২ জন।
২০১১ সাল: এস.এস.সি.- A+১ জন।
২০১২ সাল: এস.এস.সি.- A+৩ জন।
২০১৪ সাল: এস.এস.সি.- A+২ জন।
২০১৫ সাল: এস.এস.সি.- A+(Golden A+ সহ) ৫ জন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস